Friday, July 13, 2012

চিঠি - ৫০, বাগদাদ ও খলিফা হারুন-অর-রশিদ / Glimpses of world history - Nehru

এই চিঠিতে পাই অতীতের সমৃদ্ধশালী বাগদাদের কথা। মুহম্মদের মৃত্যুর কিছু দিন না যেতেই ইসলাম হয়ে উঠে পরিবারতন্ত্র, প্রথমে উম্মায়িদ শাসকেরা পরে আব্বাসের(মুহম্মদের চাচা) বংশধরেরা। এমনকি ইসলামী সেনাপতিদের জীবন যাপন ও চলনে আসে বিলাস ইত্যাদি; ধারণা করা হয়, ইসলামের বিজয় স্তিমিত হয়ে যাবার কারণও এটিই, শুরুতে আর সাধারণ সেনাবাহিনী আর ইসলামী বাহিনীর মধ্যে পার্থক্য ছিল, এই বাহিনীর সবাই ছিলেন এক আদর্শে উদ্বুদ্ব, মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধে বিশ্বাসী; কিন্তু যখন দেখা গেল বাগদাদে আব্বাসীয় শাসনকর্তা কিন্তু স্পেনে উম্মায়িদ, তখন সেই সাধারণ ভ্রাতৃত্ববোধ আর রইলো না, স্তিমিত হয়ে এলো ইসলামের বিজয় কাহিনী, এক আল্লায় বিশ্বাসী জনগনের জন্য এক শাসন ব্যবস্থা আর থাকলো না, ব্যতিক্রম তুর্কিরা, এদের নেতৃত্বে গড়ে উঠল নতুন সাম্রাজ্য। ততদিনে আফ্রিকার অনেকখানি নিজেদের মতন শাসন করছিলেন সেখানকার অধিকর্তারা, বাগদাদ কেন্দ্রিক মুসলিম শাসন যেন ইউরোপ জয়ের চেয়ে কিংবা স্পেনের উম্মায়িদ দের সাথে সংঘর্ষের চেয়ে এশিয়ার দিকে মনোযোগী হয়ে উঠে। সবমিলিয়ে যে সাম্রাজ্য শাসন করতেন খলিফা তাও ছিল ব্যাপক বিস্তৃত, উত্তর-আফ্রিকা থেকে এশিয়া মাইনর, এদিকে ভারতের সিন্ধু প্রদেশ পর্যন্ত। বাগদাদের সে আমলে লোকসংখ্যা ছিল ২০ লাখের উপরে! একটা আধুনিক নগরের যা কিছু বৈশিষ্ট্য স্কুল-কলেজ-রাস্তা-ঘাট সবই ছিল। চেঙ্গিস খানের আক্রমনের আগ পর্যন্ত বাগদাদের এই শৌর্য টিকেছিল। একটা তথ্য আছে মিশরের আলেক্সান্দ্রিয়ার লাইব্রেরি নিয়ে, ধারণা করা হত এই লাইব্রেরি ধ্বংস করেন মুসলিম শাসকেরা, কিন্তু আসলে সেটি ভুল, কনস্টান্টিনপলের সম্রাট ছিলেন এর জন্য দায়ী। মুসলিম শাসকেরা যে বই শ্রদ্ধা করতেন তা অন্য একটা বইয়ে পেয়েছিলাম, খলিফারা কোনো অনুবাদককে সেই বই এর ওজনের সমান স্বর্ণ অনুদান করতেন বলে জানা যায়, জ্ঞান বিজ্ঞানের অনেক শাখায় অবদান রাখে আরবরা ইসলামের এই সোনালী সময়ে। 



No comments:

Post a Comment